ছুটি :
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি।
২। সাপ্তাহিক ছুটি।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি।
৪। অসুস্থতা ছুটি।
৫। বাৎসরিক ছুটি।
৬। উৎসব ছুটি।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের প্রথমে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা আছে।
শ্রম আইনের ধারা-৪৬ অনুযায়ী একজন নারী কর্মী মোট ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাইবেন।
২। সাপ্তাহিক ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
কারখানা এবং সড়ক পরিবহনের কর্মীরা এক দিন এবং দোকান,বাণিজ্যিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দেড় দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি:
ধারা-১১৫ অনুযায়ী একজন কর্মী ১০ দিন নৈমেত্তিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।
তবে কোন কর্মী বছরের মাঝামাঝি সময়ে যোগদান করলে তিনি আনুপাতিক হারে নৈমেত্তিক ছুটি পাইবেন।
৪। অসুস্থতা ছুটি:
একজন কর্মী শ্রম আইনের ১১৬ ধারা অনুযায়ী ১৪ দিন অসুস্থতা ছুটি পাইবেন।
উক্ত ছুটি পেতে হলে একজন কর্মীকে ডাক্তারের প্রত্যয়নপএ প্রদর্শন করতে হবে।
৫। বাৎসরিক ছুটি:
কোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য একদিন বাৎসরিক ছুটি পাইবেন।
শ্রম আইনে একটি মাএ ছুটি যা নগদায়ন করা যায়।
৬। উৎসব ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৮ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মী ১১ দিন উৎসব ছুটি পাইবেন।
প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উক্ত ছুটির দিনগুলো নির্ধারন করতে হবে।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি:
শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরন ছুটি দেয়ার কথা বলা আছে।
সাপ্তাহিক ছুটি এবং উৎসব ছুটির ক্ষেএে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান করতে হবে।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি:
শ্রম আইনের ৫ম তফসিলে উক্ত ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১ বছরের বেশি কেউ উক্ত ছুটি পাইবেন না এবং পেশাগত ব্যাধির জন্য উক্ত ছুটি ২ বছরের বেশি কেউ পাবেন না।
কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটির দেয়া যাবে না::::
সবাই আমার কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলেন যে কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দেয়া যাবে না।
শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দেড় দিন এবং কারখানাকে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এবার আপনি খুব জ্ঞানী মানুষের মত করে যে কাজটি করেন তা হল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়ে দেন।খুবই ভাল আপনি শ্রমিকে ভালবেসে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন।
এবার বলেন দাদা শ্রমিকে আপনি ঘোষনা করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন তাহলে শ্রমিক উক্ত সপ্তাহে কোন সাপ্তাহিক ছুটি পায়নি কারন আপনিই শ্রমিকে উক্ত সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়েছেন এবং হাজিরা খাতায় উৎসব ছুটি লিখেছেন কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটি লিখেন নাই।
শ্রম আইনের ১০৪ ধারাতে এবং বিধিমালার ১০১ বিধিতে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকে সাপ্তাহিক ছুটি দেয়া না হয় বা যায় তবে পরর্বতী ৩ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
আমার যুক্তি খুব সাধারণ আপনি সাপ্তাহিক ছুটি দিনকে উৎসব ছুটি দিয়ে রিপপ্লেস (replace) করতে পারবেন কোথাও বলা নাই তাই আপনি শ্রমিকে যে সাপ্তাহিক ছুটি দেননি সেটি দিয়ে দেন।
তাহলে আর সমস্যা নেই কারন আপনি শুক্রবার ছাড়া উৎসব ছুটি দিতে পারে না তাহলে সাপ্তাহিক ছুটির ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেন।
অনেকে বলার চেষ্টা করবেন যে আমি শ্রমিকে শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে তাহলে আবার ক্ষতিপূরণ কি জন্য। দাদা শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে এবং হাজিরা খাতায় কিন্তু উৎসব ছুটি লিখিছেন সেখানে কিন্তু সাপ্তাহিক/উৎসব লেখা যায় না কারন একদিনে দুটি ছুটি দেয়া যাবে তা কিন্তু বলা নাই শ্রম আইনে।তবে সাপ্তাহিক ছুটি না দিলে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি দিতেই হবে তা শ্রম আইনে বলা আছে।
সরকারী প্রতিষ্ঠানের কথা টেনে লাভ নাই কারন সরকারী কর্মীরা নিজস্ব চাকুরী বিধিমালাতে চলে।
আশা করি এরপরে আর কেউ ব্যাখ্যা চেয়ে লজ্জা দিবেন না।